নিয়ামতপুরে দুই বছরেও শেষ হয়নি সড়ক প্রশস্ত করণের কাজ, দুর্ভোগে জনসাধারণ ।।
ডেস্ক নিউজ
Link Copied!
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর মান্দা-নিয়ামতপুর-শিবপুর-পোরশা রাস্তা প্রসস্তকরণ সড়কের ৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দীর্ঘ দুই বছরেও শেষ হয়নি।দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় জনসাধারণের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ ২৬ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ৪০% কাজও হয় নাই। খোয়া পাথর উঠে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত সাইকেল, মটরসাইকেলসহ ভারী যানবাহনের টায়ার নষ্ট হচ্ছে। জানা গেছে, নওগাঁর মান্দা-নিয়ামতপুর-শিবপুর-পোরশার রাস্তাটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকাজুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়।এরপরই রাস্তাটি প্রশস্ত এবং পাকা জন্য ২০১৮ সালে টেন্ডার আহবান করে সওজ। কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি। সড়কটির ২৬ কিলোমিটার রাস্তায় ৩১টি কালভার্ট ও তিনটি সেতু নির্মাণ হয়। রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময়সীমা ছিল ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।কিন্তু জুন পেরিয়ে এখন ফেব্রুয়ারী।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদার একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করে যাচ্ছেন কর্তৃপক্ষের নিকট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাস্তবায়নের রাস্তা নির্মানাধীন ঠিকাদার ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন এক্সপেকটা (জেভি)।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার কেবলমাত্র পূর্বের কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার করে রাখা হয়েছে যানবাহনের চাকা ঘুরানোর জন্য। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পড়ে থাকায় রাস্তা জুড়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি জমে যানবাহন চলাচল হয়ে পড়েছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
জানা গেছে, প্রায় ৬ মাস ধরে রাস্তার কাজ একদম বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে দূর্ভোগে পড়েছেন পথচারী। রাস্তার এমন বেহাল দশার অযুহাতে পরিবহন মালিকরাও দফায় দফায় ভাড়া বৃদ্ধি করছেন। সড়কে কাজের ধীরগতির কারণে এলাকাবাসীর দূর্ভোগের কথা ভেবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছিলেন। খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর কাজের কিছু তোড়জোড় শুরু হলেও করোনাভাইরাসের কারণে আবারও বন্ধ হয়ে যায় কাজ। এরপর এখনো পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি ওই সড়কে। তবে মাঝে মাঝে লোক দেখানো বা কর্তৃপক্ষ দেখানোর জন্য নিয়ামতপুর থেকে টিএলবি মোড় পর্যন্ত মাত্র ৫ কিলোমিটার রাস্তায় রোলার দিয়ে, পানি দিয়ে কাজ করে। এখন শুধুমাত্র এই ৫ কিলোমিটারে কার্পেটিং এর কাজ করছে। তাও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিটমিন না দিয়ে কার্পেটিং করে যাচ্ছে বলে অভিযোগকরছে স্থানীয়রা। বীরমুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, বেশ কিছুদিন আগে বিটমিন দিয়েছে তা এখন শুকে গেছে। কিন্তু বর্তমানে কার্পেটিং দেওয়ার সময় কোন বিটমিন দিচ্ছে না। ফিনিসিংও খুব খারাপ। মনে হচ্ছে এখনি কার্পেটিং উঠে যাবে। বাঁকী রাস্তায় কোন কাজ করছে না।এছাড়া রাস্তা যে পরিমান প্রসস্ত হওয়ার কথা অজ্ঞাত কারণে তাও হচ্ছে না। রাস্তাটির প্রসস্ত ২৮ ফিট হওয়ার কথা। এর মধ্যে কার্পেটিং ১৮ ফিট এবং দুধারে ৫ ফিট করে মাটি থাকবে। কিন্ত দুধারে তো তেমন কোন মাটি নেই। আবার বিভিন্ন মোড়গুলো মৃত্যুকূপ হয়ে আছে। বিশেষ করে বগধন গ্রামের কাছে মোড়ে একটি বিপদজনকভাবে বাড়ী থাকলেও তা অপসারণ করা হয়নি। যে কোন মূহুর্তে সেখানে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
এরকম আরো অনেক মোড় রয়েছে বিপদজনক অবস্থায়।এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান মুঠো ফোনে জানান, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এবং লকডাউনের কারণে লেবার সংকট এবং মালপত্র না পাওয়ায় ঠিকাদার ঠিকমত কাজ করতে পারেনি। ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে বাজেটের পরিমান বৃদ্ধি করা হয়নি। কাজের মানের বিষয়ে তিনি জানান , কাজ সন্তোষজনক। কার্পেটিং এর পরে দুধারের মাটি ভরাট বিষয়ে বলেন, ১৮ ফিট কার্পেটিং এর পরে দুধারে তিন ফিট করে মাটি থাকবে। যদি চুড়ান্ত বিল পরিশোধের সময় সিডিউল অনুযায়ী মাটি ভরাটের কাজ না করে তাহলে মাটি ভরাটের টাকা কর্তন করে বিল দেওয়া হবে।