কক্সবাজার মহেশখালীর আওয়ামী যুবলীগ নেতা কামাল উদ্দিন’র করুন আর্তনাদ,পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন,প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা কামনা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজার জেলা মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের আওয়ামী যুবলীগ নেতা কামাল উদ্দিন তার অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে বলেন, জীবনের উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ের তীব্রতা এতই ভয়াবহ তা বহন করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।জীবনে কারো সাথে তেমন কোন অন্যায় করেছি বলে মনে হয় না।ছোট বেলা থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে নিজেকে লালন করে বেড়ে উঠেছি।বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পতাকা বহন করেছি সু দীর্ঘ সময়।জাতির জনকের প্রশ্নে কারো সাথে কোনদিন আপোষ করিনি।স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা কালীন সময়ে জামাত – বিএনপির রাজনীতির বিরুদ্ধে আমার সংগ্রাম এটা নিত্যদিনের একটি রুটিনের অংশ ছিল। এতটা ছাত্র রাজনীতির কারনে তৎকালীন মাতার বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে জামাত পন্থী শিক্ষকদের রোষানলে পড়তে হতো প্রতিনিয়ত! মিছিল মিটিংয়ে সবসময় নিজেকে নিয়োজিত রাখতাম।ছাত্রলীগের নামে কেউ বদনাম করলেই তার সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হতাম।যার কারণে স্কুলের সম্মানিত শিক্ষকরা আমাকে ভাল চোখে দেখত না কারণ তখন অধিকাংশ শিক্ষকরা ছিলেন জামাত পন্থী।
এস এস সি পাশ করে পড়া লেখার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে কক্সবাজার সিটি কলেজে ভর্তি হই।ক্যাম্পাশে পা রেখে বুঝতে পারলাম কলেজের অধিকাংশ ছাত্ররা ছাত্র শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত। তখন বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।তখন মনোবল না হারিয়ে কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে শিক্ষা শান্তি প্রগতির পতাকা বহন করে এগুতে থাকলাম। বহু ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে শুরু করা পথচলা কয়েকশ জনে রুপান্তরিত হলো।পর্যায়ক্রমে আমরা একটা অবস্থান তৈরি করে ফেললাম।কিছুদিন পর কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি /সাধারণ সম্পাদক সিটি কলেজে প্রথম কর্মী সমাবেশ করতে আসেন।সেদিনের বিশাল ছাত্র সমাবেশে আমিও মধ্যম সারিতে বসে বক্তব্য শুনতেছিলাম। যথারীতি সমাবেশ শুরু হলো, মনোযোগ সহকারে তাদের বক্তব্য শুনতেছিলাম। হঠাৎ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমার প্রিয় নেতা এ্যাড.ফখরুল ইসলাম গুন্দু ভাইয়ের নজরে আসি।স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম এই সুবাদে তিনি আমাকে খুব ভাল করে চিনতেন। তিনি আমাকে ডেকে নিয়ে তার পাশে বসালেন এবং তিনি দাঁড়িয়ে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দিলেন। সুযোগ পেয়েই এক বক্তব্য পুরো সমাবেশস্থলকে উজ্জীবিত করি তখন মুহুর মুহুর করতালিতে সবাই আমাকে সাদরে গ্রহণ করেন এবং ঐদিন রেডিমেড কমিটি বাতিল করে আমাকে ১ নং যুগ্ম আহ্বায়ক করে কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি প্রকাশ করেন। তখন শত বাঁধা পেরিয়ে শিবের অধ্যুষিত ঘাটিকে ছাত্রলীগের দুর্গ হিসাবে গড়ে তুলতে দিন রাত পরিশ্রম শুরু করি।এতে করে ছাত্র শিবিরের রোষানলে পড়ি।তখন আমার উপর বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি আসতে থাকে।সেদিন সেই স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের হুমকি উপেক্ষা করে আমি আমার রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করে যেতে লাগলাম।রগ কাটা গোষ্ঠী আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েক দফা আমার উপর হামলা করল, এমন কি আমাকে অতর্কিত অবস্থায় একদিন ক্যাম্পাস থেকে ফিল্মি স্টাইলে উঠিয়ে নিয়ে গেল। তারা তখন আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে লাগল। আমাকে শর্ত জুড়ে দিল – হয় শিবির করতে হবে না হয় কক্সবাজার ছেড়ে চলে যেতে হবে।
এদিকে আমাকে অপহরণের খবর শুনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করলে কক্সবাজার শহরে একটা থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়।তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি /সাধারণ সম্পাদক দ্রুত সময়ে কলেজ ক্যাম্পাসে চলে আসেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতাই তাৎক্ষণিক আমাকে উদ্ধার করেন। শিবিরের দূরদর্শ ক্যাডার দিয়ে ওৎ পেতে থেকে আমার উপর হামলা করেছিল। সেদিন সকল ডর, ভয়, মামলা হামলা উপেক্ষা করে দুর্বার গতিতে আমি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে গেছি।এবং পুরো সিটি কলেজকে শিবির মুক্ত করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঘাঁটিতে পরিনত করি।সাংগঠনিক কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।দীর্ঘ সময় সিটি কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেছি।
প্রিয় ভাইয়েরা – জাতির জনকের আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুত হইনি। আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগের সৈনিক হিসেবে কাজ করেছি। অদ্যাবধি নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির পতাকা বহন করে যাচ্ছি।
এবার আসল কথায় আসি – ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে আমি মাতার বাড়ি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পস্কোর সাবকন কসমস এনার্জি প্যাকে মালামাল সাপ্লাই শুরু করি। সেই কোম্পানি কৌশলে আমার এক কোটি উনত্রিশ লক্ষ টাকা বিল বকেয়া রেখে অক্টোবর মাসে কৌশলে কসমসের প্রতিষ্ঠান টা আমাকে হস্তান্তর করেন।আমার বকেয়া বিল পরিশোধ এবং এক মাসের মধ্যে পস্কোর সাথে সরাসরি চুক্তি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন আমাকে।এবিষয়ে কসমস এনার্জি প্যাক পস্কোকে একটি মেইলের মাধ্যমে অবহিত করেন।পস্কো আমকে ১৫/২০ দিনের খাবারের মালামাল মজুত করে তার পর উক্ত ক্যাটারিং চালানোর অনুমতি দেন।
পরে উক্ত মালামাল মজুত করতে আমি কতিপয় আপনজনদের কাছ থেকে লোন নিই।উক্ত অক্টোবর মাসে আমি আরও প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা মত বিনিয়োগ করি। স্বপ্ন ছিল শ্রমিকদের খাবারের মান বাড়িয়ে পস্কোর বিবেচনায় আসার সকল চেষ্টা করেছি। মাস শেষে কসমস এনার্জি প্যাক আমার সাথে প্রতারণা করে পস্কোর সাথে আমাকে নতুন করে চুক্তি করিয়ে দেইনি।তখন স্টকে আমার ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল ছিল। পস্কোর কতিপয় বাঙ্গালী ঘুষখোর কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের গুটিকয়েক নেতার আঁতাতের মাধ্যমে আমার ব্যবসা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।তখন আমি নিরুপায় হয়ে ঐ নেতাদের হাতে পায়ে ধরে কান্না কাটি করেও তাদের মন গলাতে পারিনি।তখন প্রকল্পে ঐ সাইনবোর্ডধারী নেতাদের অসংখ্য ব্যবসা চলমান ছিল। আমি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি জেনেও তারা রাতের আঁধারে আমার ব্যবসাটা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।মিছিল মিটিং আন্দোলন সংগ্রামে আমি সামনের সারিতে ছিলাম,সুখে দুঃখে যতটুকু পেরেছি কর্মীদের সহযোগিতা করে সবার ভালবাসার মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছি কিন্তু তারা সেটা সহ্য করতে পারেনি।যার ফলে গোটা পরিবারকে নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করতেছি।
প্রিয় মাতার বাড়ি বাসী – আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন যে কসমস এনার্জি প্যাক প্রকল্প থেকে মালামাল নিয়ে পালানোর সময় গোপন সংবাদ পেয়ে তাদের ০৮ ট্রাক সহ বিপুল সংখ্যক মালামাল আটক করলে প্রথমে মহেশখালী থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ উক্ত আটককৃত মালামাল ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে তাহাকে আমার টাকার দায়িত্ব নিতে বললে ওনি তাতে রাজি হননি।অনেক হুমকি ধামকির পরেও আমাকে রাজি করাতে না পেরে আমাদের মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপি মহোদয়কে দিয়ে আমাকে ম্যানেজ করেন।আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে মাতারবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পে বসলে এমপি মহোদয় লাউড স্পিকারে সেদিন বলেছিলেন জয় বাংলা ভাইয়া তোমার সকল টাকার দায়িত্ব আমি নিলাম তুমি সকল মালামাল সহ গাড়ি গুলোকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর কর।তোমাকে প্রয়োজনে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়ে তোমার টাকা আদায় করে দিব।
আমি যেহেতু সক্রিয় একজন রাজনৈতিক কর্মী,, এমপি মহোদয়ের পক্ষে রাজনীতি করি সেজন্য সেদিন তার সম্মান রাখতে আটককৃত গাড়ি গুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি। পরে এমপি মহোদয় আজ /কাল করতে করতে দীর্ঘ দেড় বছর আমার টাকা গুলো আদায় করে দিতে পারেনি।এই টাকার পিছনে দৌড়াতে গিয়ে বিগত দেড় বছরে আমি প্রায় ২০/২২ লক্ষ টাকা খরচ করি।যাদের কাছে লোন নিয়েছিলাম তাদের টাকা ফেরৎ দিতে না পারায় দুয়েক জন আমার পরিবারের উপর নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করতেছে এবং হুমকি দামকি দিতেছে।সে মাননীয় এমপি মহোদয়ের কথা রাখতে গিয়ে আমি এবং আমার পরিবার এবং যারা আমাকে সহযোগিতা করেছে তারা আজ বড় অসহায়। এখন আর ফোনটাও রিসিভ করেনা।অনুনয় বিনয় করে লিখা সকল এসএমএস সংরক্ষিত করে রেখেছি।
প্রিয় জনতা- টাকা গুলো আদায় করা সম্ভব না হলে আমাদের মৃত্যু ছাড়া কোন পথ খোলা নেই। এখন হয় টাকা না হয় মৃত্যু! দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। পিছনে ফিরে থাকাবার সুযোগ নেই। আমার পরিবার পরিজন নিয়ে আজ আমি মানবিক জীবনযাপন করতেছি।জাতির জনকের আদর্শের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে আমাদের মানবিক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে
আমার পরিবারকে বাঁচাতে সাহায্য কামনা করতেছি।