শিল্পকলা একাডেমিতে ৫ দিনব্যাপী জাতীয় মিষ্টি উৎসব শুরু
প্রিয়াংকা ইসলাম :
দেশের অঞ্চলভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি নিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় মিষ্টি উৎসব শুরু হয়েছে।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে মিষ্টি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পী হাশেম খান। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমেদ।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৫দিনব্যাপী এ মিষ্টি মেলা চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রতিদিন বিকাল ৫টায় থাকবে লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
একাডেমি সূত্র জানায়, খাদ্য সংস্কৃতি হিসেবে দেশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলোকে সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভিন্নধর্মী এ আয়োজন। এতে দেশের ৬৪ জেলা থেকে ৬৪ টিরও বেশি মিষ্টি স্টল নিয়ে একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে বসবেন শিল্পীরা। অংশ নেবেন দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আগত মিষ্টি কারিগররা। বাঙালির জীবনে মিষ্টিমুখ ছাড়া কোন শুভকাজ সমাপ্ত হয় না। মিষ্টির এই প্রচলন থেকেই দেশে এলাকাভেদে একেক অঞ্চলের মিষ্টির সুখ্যাতি রয়েছে। ঐতিহ্য হিসেবেও মিষ্টির ইতিহাস দুই থেকে আড়াইশ বছরের। বৈশাখের প্রথম দিনে হালখাতা থেকে শুরু করে ঈদ, পুজা পার্বন, বিয়ে, আনন্দ উৎসবে মিষ্টি অন্যতম মাধ্যম যা আমাদের খাদ্য সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে। সে কারণে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে বাংলার মিষ্টি জগৎ জোড়া নাম লিখিয়েছে নান রকম মিষ্টি। ক্ষীরকদম, সন্দেশ, দই, গোলাপজাম, কাঁচা ও পাকা দুই রকমের আম রসগোল্লা, মতিচুরের লাড্ডু, কেশর কালাকাধ, মালাই চমচম, সাতক্ষীরার সন্দেশ, নলেন গুড়ের সরপুরি , প্যাড়া, দ্বীপজেলা ভোলার মহিষের দুধের টক দই, চাঁদপুরের মতলবের বিখ্যাত ক্ষীর, চট্টগ্রামের সাদা মিষ্টি, মনসুর, আফলাতুন, কুমিল্লার রসমালাই, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, ঢাকার বাকরখানি, বুনদিয়া, স্পঞ্জ রসগোল্লা (নবাবগঞ্জ), বাতাসা, রাজবাড়ির চমচম, গোপালগঞ্জ রসগোল্লা, খুলনার সুন্দরবনের মধু, পুড়ের সন্দেশ, পুড়ের গজা, যশোরের খেজুরের গুড়, জামতলার মিষ্টি, পাটালী, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, মেহেরপুরের সাবিত্রি মিষ্টি, রসকদম, পাবনা ও নওগাঁর প্যারা সন্দেশ, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, বগুড়ার দই, ময়মনসিংহের মন্ডা (মুক্তাগাছা), কৃষ্ণা কেবিনের মালাইকারীসহ হরেক রকমের মিষ্টি ও মিষ্টান্ন বাঙালির ঐতিহ্যের সাথে যোগ হয়েছে। এগুলো কেবল দেশেই নয় সুনাম ছড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও।
ইতোমধ্যে দেশের জিআই পণ্য হিসেবে মিষ্টান্নের মধ্যে এরই মধ্যে নিবন্ধন পেয়েছে নাটরের কাঁচাগোল্লা, বগুড়ার দই, ‘টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম’ কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার রসমালাই,যশোরের খেজুর গুড়সহ নানান মিষ্টান্ন।