খড়ের ছাউনির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে ২৬ টি পরিবার
মোঃ মোমিন ইসলাম সরকার,দেবীগঞ্জ প্রতিনিধি:
পঞ্চগড় জেলার সীমানা ঘেঁষা নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নে খড়ের ছাউনি ঘরের ঐতিহ্য ধরে আছে ২৬টি পরিবার ।
ইউনিয়নের গোসাইগঞ্জ গ্রামের বেত বাগানে কয়েক যুগ ধরে খড়ের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা ঘরে বসবাস করছেন এই পরিবার গুলো ।বর্তমান আধুনিকায়নের যুগে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খড়ের ঘর বিলুপ্তির পথে । শীত ও গরম উভয় মৌসুমে আরামদায়ক এই খড়ের ছাউনির ঘর। এক সময় গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের প্রধান ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই খড়ের ঘর । যারা একটু বিত্তবান ছিল তারা দো-চালার পরিবর্তে চার-চালার খড়ের ছাউনির ঘর তৈরি করতেন । কিন্তু বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালির ঐতিহ্যের এই চিহ্নটি। খড়ের ছাউনির ঘর তৈরির জন্য গ্রামে গ্রামে বিশেষ কারিগর ছিল । তারা বিভিন্ন কৌশলে এই ঘড় মেরামত ও তৈরি করত । ঘরের চালায় ফুটে উঠত অন্য রকম সৌন্দর্য । কিন্তুসময়ের বির্বতনে খড়ের ছাউনি তৈরির কারিগরে’র সংখ্যা কমে এসেছে। বর্তমানে কয়েকটি ইউনিয়ন মিলেও একটা খড়ের ঘর চোখে পড়ে না । যদিও বা চোখে পড়ে সেগুলোর অবস্থা খুবই জীর্ণ । এক সময় খড়ের ঘরের ছাউনির প্রধান উপকরণ ছিল খড়। শ্রমজীবী মানুষেরা খড়, আঁখ পাতা ও কাশফুলের গাছ দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করত এই ঘর। এই ঘর তৈরিতে যারা পারদর্শী তাদেরকে স্থানীয় ভাষায় ছাফরবান বলা হয়। তাদের মজুরিছিল ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। বিশেষ কায়দায় খড়কে সাজিয়ে কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে ছাউনি দেয়া হতো। ছাউনির উপরে বাঁশ দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিত।সাধারণত বন্যা,ভূমিকম্প,ঝড় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এসব ঘর এক থেকে তিন বছর পর্যন্ত টিকে থাকতো । এই ঐতিহ্যবাহী খড়ের ঘর দেখতে বর্তমানে গোসাইগঞ্জ গ্রামে যাচ্ছেন অনেকেই ।