করোনামুক্ত বাংলাদেশ বিশ্বকে উপহার দিতে আপনার সামনে ইতিহাসের হাতছানি। ৪০ বছর থেকে নামিয়ে নিম্নে ১৮ বছর পর্যন্ত সব নাগরিককে এখনই টিকা বা ভ্যাকসিন গ্রহণের আওতায় নিয়ে এলে করোনামুক্ত বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে উদ্ভাসিত হবে। আগামী শতাব্দীতে আপনি সে ইতিহাস সৃষ্টির খাতায় নাম লেখাবেন গৌরবের সঙ্গে। দেশের সুনাম বাড়বে। আপনি করতে পারবেন। আপনার এক যুগের শাসনামল নিয়ে যত কথাই হোক দেশকে পৃথিবীর সামনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেলে দাঁড় করিয়ে দেশকেই নয়, নিজেকেও নেতৃত্বের দক্ষতায় ক্যারিশমায় সাহসে বিরল নজির স্থাপন করেছেন। ৯ লাখ ঘরহীনকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার টার্গেট নিয়ে এর মধ্যে ৭০ হাজার ঘর নির্মাণ করে ঘরহীন মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। আরও ৫০ হাজার ঘর ঘরহীনদের দিতে ১ হাজার কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। এ যে বঙ্গবন্ধুর সেই অন্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের নিশ্চয়তাবিধানের আরেক বিপ্লব শুরু করেছেন। এমন বিপ্লবের জন্য যে কলিজা লাগে তার প্রমাণ দিয়েছেন।
দেশে গণজাগরণ ঘটিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, করোনার শুরুতে চিকিৎসাব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। অর্থনীতি ছিল স্থবির। সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপনি বিলম্ব করেননি। নিজেই যার নেতৃত্বের প্রাজ্ঞতা দিয়ে মুমূর্ষু স্বাস্থ্য খাতকে জাগিয়ে করোনাযুদ্ধে সুসংগঠিত করেছেন নতুন চোহারায় দ্রুত। আপনি করোনা ও অর্থনীতির উন্নয়ন অব্যাহত রাখার যুদ্ধে সফল নায়কের আসন নিয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। অর্থনীতি প্রশংসিত হয়েছে। অনেক শিল্পপতি, আমলা, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসক থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রাণ হারালেও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশকে অনেক নিরাপদ রাখা গেছে। যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের বেদনা ও ক্ষতি কখনো পুষিয়ে উঠবে না। দেশের জন্যও অনেক মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি।
যারা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন তারা জানেন কোন কেয়ামত থেকে ফিরে এসেছেন। করোনা মহামারী কবে থামবে কেউ জানে না। পৃথিবী তবু প্রতিরোধের ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছে। আপনি আপনার দূরদর্শিতা ও সাহস আর অঙ্গীকার পূরণ করেছেন। পশ্চিমা দেশের ৪০-৫০ ঊর্ধ্ব অনেকে যেখানে টিকা পাচ্ছেন না সেখানে বাংলাদেশ নিম্নে ৪০ বছর পর্যন্ত টিকা নিতে পারছে। টিকা নিয়েও বিরক্তিকর বিতর্ক-কুৎসা যারা প্রচার করেছিলেন তাদের মুখেও ছাই পড়েছে। দলমত-নির্বিশেষে আপনার ডাকে ও সুন্দর ব্যবস্থাপনায় আজ মানুষ টিকা গ্রহণে এগিয়ে এসেছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও করোনার ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা হিসেবে দারুণ ভূমিকা রাখছেন। শুরুতে জীবন দিয়ে তারা যে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন আপনার তদারকি ও সাহসে প্রেরণায় তারা আজ অনেক সফল এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও। এখন নিম্নে ১৮ বছর পর্যন্ত করোনা টিকা গ্রহণের নির্দেশ দিলে দেশের ছাত্র-কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত তরুণসমাজ করোনা প্রতিরোধ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিরাপদে সতর্কতার সঙ্গে ভূমিকা রেখে দিনযাপন করতে পারে। করোনার ভয়ও দূর হবে। এক কথায় আমরা যেখানে আছি সেখানে দেশ করোনামুক্ত করার ইতিহাস গড়তে পারবেন আপনি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেটে করোনা মোকাবিলায় থোক বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা রেখেছেন। করোনাভাইরাসের টিকা আমদানিতে ৪ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে আরও ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৩ কোটি ডোজ কিনেছেন। ছয় মাসে ৫০ লাখ করে এ ডোজ আসবে। ৫০ লাখ ডোজ এসেছে। ভারত আরও ২০ লাখ ডোজ উপহার দিয়েছে। ৭০ লাখ ডোজ হাতে নিয়ে টিকাদান শুরু করলে দেশব্যাপী সব বয়সের নারী-পুরুষ এর মধ্যে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০৯ জন টিকা নিয়েছেন। শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১৩ লাখ ৬৮ হাজার মানুষ। রোজ টিকা গ্রহণে মানুষের কি উচ্ছ্বাস। বাড়ছে মানুষ। বলছে কারও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।