হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক ইস্যুতে : মহেশখালীতে উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, আ’লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ

Link Copied!

তারেক আজিজ,মহেশখালী:
হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক ইস্যুতে মহেশখালীতে দফায় দফায় লাঠি মিছিল, থানা, উপজেলা পরিষদে হামলা ও আ’লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাত ১০টার দিকে কালারমার ছড়ায় উত্তরনলবিলায় বৌদ্ধ মন্দিরে আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছে।
কালারমার ছড়ায় যুবলীগ নেতাকে হামলা ও বাড়ি ভাংচুর, বড় মহেশখালীতে আওয়ামী লীগ অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

পরে মিছিল থেকে উপজেলা পরিষদে ইট নিক্ষেপ করে জানালা ভাংচুর করে ও থানায় হামলা করা হয়েছে।
পুলিশকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে,। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি করেছে। আহত হয়েছে একাধিক পুলিশ সদস্য।
পুলিশ সূত্রে জানায়, হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হয়েছেন— এমন খবর মহেশখালী এসে পৌঁছুলে দেশের অন্যান্য এলাকার মতো মহেশখালীর ভিভিন্ন স্থানে হেফাজতের ব্যানারে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। গ্রাম এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে বাজার এলাকায় জড়ো হয়। রাত ১২টার কিছু সময় পর একটি বিশাল লাঠি মিছিল বড় মহেশখালী থেকে উপজেলা সদরে আসে, মিছিলটি পৌর শহরের গোরকঘাটা বাজার থেকে সড়কের দু’পাশে ভাঙচুর চালিয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকায় যায়, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কাছের জানালা ভাঙচুর করে।
এ সময় মূল ফটক বন্ধ পেয়ে সরকারি কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে মিছিলটি মহেশখালী থানার সামনে গিয়ে থানায় ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে স্লোগান দিতে থাকে। ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে ভাঙচুর চালায়। মিছিলটি প্রধান সড়ক ধরে বড় মহেশখালী ফেরার পথে পালপাড়া এলাকায় সড়কের দু’পাশে বিভিন্ন হিন্দু বাড়িতে হামলা করে।
মিছিলকারীরা বড় মহেশখালী বাজারে পৌঁছে বড় মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজ মিয়া বাশির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা করে এবং বড় মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়েই বেশ তাণ্ডব চালায়। তারা কার্যালয়টির দরোজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে আসবাপত্র বাইরে নিয়ে এসে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়াও মহেশখালীর উত্তর অংশ কালারমার ছড়া এলাকায় একই কায়দায় বিক্ষোভকারী
রা সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে ওই এলাকায় একটি ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করার চেষ্টা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় পুলিশের একাধিক ইউনিট ওই এলাকায় গেলে মিছিলকারীরা দু’দিক থেকে পুলিশকে ঘিরে ফেলে হামলা করে। পুলিশ এ সময় ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই এলাকায় বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় যুবলীগ নেতা কলিমুল্লাহ হাসান মুন্নার বাড়িতে হামলা, ভাঙচূর ও লোকজনকে পিটিয়ে আহত করে। এ সব ঘটনায় রাতেই মহেশখালী থানায় পুলিশ বাদি হয়ে প্রায় ৩০০জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারেক রহমান জুয়েলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার বিষয়ে হার্ডলাইনে যাচ্ছে প্রশাসন
এ বিষয়ে মহেশখালী- কুতুবদিয়া সার্কেল জাহেদুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাই ঘটনার অনুরূপ বিবরণ দিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে, পুলিশ যে কোনো উপায়েই এমন জঘন্য ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করবে। এ সকল ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের সনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মহেশখালী-কুতুবদিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান -ইতোমধ্যে মহেশখালীতে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে। সমগ্র বিষয়টিকে কঠোর ভাবে দেখছে পুলিশ।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাফুজুর রহমান জানান, মহেশখালীতে হেফাজত নেতা মামুনুল হক ইস্যুতে যে বা যারা তান্ডব চালিয়ে সরকারি অফিস,জনমালামাল সহ হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।